বিতাড়িত অভিশপ্ত শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে
অসীম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
আল্লাহু আক্বার
মানুষের নয়! সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহ্র।
ফলে দাসত্ব, আইনের আনুগত্য ও উপাসনা একমাত্র আল্লাহ্র; অন্য কারো নয়।
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহ্মাতুল্লাহ!
আপনি জানেন কি- সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনাসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকেই সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক, আইনদাতা-বিধানদাতা ও নিরংকুশ কর্তা স্বীকার করে নেয়া হলেই আল্লাহকে একমাত্র রব মানা হয়; আর এটাই হলো আল্লাহর প্রতি ঈমান। আল্লাহর প্রতি ঈমানের ঘোষণা হলো রাব্বুনাল্লাহ্। কিন্তু মানুষ যখন বাধ্যগত জীবনে সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, পালনকর্তা, রক্ষাকর্তা, জীবন মৃত্যুর মালিক হিসাবে আল্লাহকে রব স্বীকার করেও তাদের স্বাধীন জীবনে নিজেদের জান-মাল ব্যবহারের ক্ষেত্রসহ সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের মালিক মানুষকে গ্রহন করে নেয়, তখন মানুষ তাদের স্বাধীন জীবনে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ফেরাউন, নমরুদ, আবু জাহিল, আবু লাহাবদের মতো মানুষকেই তাদের রব স্বীকার করে নেয়। ফলে আল্লাহর প্রতি ঈমান না হয়ে আল্লাহর সাথে শির্ক, কুফুরী এবং আল্লাহর সাথে চরম বিদ্রোহ হয়। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষের সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে মানব রচিত ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষের মনগড়া আইনের আনুগত্য করার কারণে আল্লাহর দাসত্ব না হয়ে মানুষের দাসত্ব করা হয়; ফলে আল্লাহকে নয়, মানুষকেই ইলাহ গ্রহন করা হয়। যার কারণে নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাতের আমলসহ সকল আমল বিনষ্ট হয়ে যায় এবং আখিরাতে জান্নাত হারাম হয়ে জাহান্নামের আগুনেই স্থায়ী আবাস হয়।
আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশসহ বর্তমান বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের মানুষই তাদের সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র ইত্যাদি মানব রচিত ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষকে সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের মালিক স্বীকার করে মানুষকেই রব ও ইলাহ র স্থান দিয়ে আল্লাহর প্রতি ঈমান শুন্য হয়ে শির্ক ও কুফুরীর মহাপাপে নিমজ্জিত আছে। ফলে সকলের সকল আমল বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং জাহান্নামের আগুনেই স্থায়ী আবাস তৈরী হচ্ছে। এমতাবস্থায় নিজ জীবনের কল্যাণ প্রত্যাশী সকলকেই সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সাথে শির্কের এই মহা ক্ষতি থেকে অবশ্যই বাঁচতে হবে এবং সেক্ষেত্রে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষের মিথ্যা সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব পরিত্যাগ করে জীবনের সর্বক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকেই সার্বভৌমত্বের একমাত্র মালিক, আইনদাতা-বিধানদাতা ও নিরংকুশ কর্তা স্বীকার করে রাব্বুনাল্লাহ বলে ঈমানের ঘোষণা দিয়ে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতে হবে। এবং ঈমানের দাবী পূরণে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহ প্রদত্ত্ব ব্যবস্থা ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সময় ও অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই আল্লাহর ওয়াদা অনুযায়ী মিলবে আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত এবং আল্লাহর ইচ্ছায় সমাজ ও রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হবে তাঁরই প্রদত্ত্ব কল্যাণকর ব্যবস্থা ইসলাম।
কিন্তু মানুষের সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে মানব রচিত ব্যবস্থা গণতন্ত্রএর অধীনে জোট-ভোট বা নির্বাচনে অংশগ্রহন, কিংবা সশস্ত্র সংগ্রাম সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত পদ্ধতি নয়; এ দু’টোই শির্ক ও কুফুরীর পথ। আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিই সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার একমাত্র পদ্ধতি। মানবতার সার্বিক কল্যাণে ইসলামী সমাজ আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতেই সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ করে যাচ্ছে। আল্লাহর সার্বভৌমত্বের প্রতিনিধিত্বকারী নেতার নেতৃত্বে আল্লাহর আইন-বিধান দ্বারা সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালিত হলে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সমাজের সকল মানুষের মৌলিক অধিকারসহ সকল অধিকার আদায় ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা হবে, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠিত হবে, শোষণমুক্ত অর্থনীতি এবং সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে; মানুষে মানুষে সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব তৈরী হবে, বৈষম্য দূর হবে। ফলে সকল মানুষের দুনিয়ার জীবনে সুখ, শান্তি. সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে আর আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং পরকালে বিশ্বাসী ঈমানদারগণ পরকালের স্থায়ী জীবনে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেয়ে চির সুখের স্থান জান্নাতে স্থায়ী আবাস পাবে; যা হবে তাদের চূড়ান্ত সফলতা।
জাতির মানুষকে এখন যা করতে হবে তাহলো- সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় মানুষের সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের মিথ্যা দাবী অস্বীকার, অমান্য করে আল্লাহকেই জীবনের সকল ক্ষেত্রে সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক, আইনদাতা-বিধানদাতা ও নিরংকুশ কর্তা স্বীকার করে রাব্বুনাল্লাহ ঘোষণা দিয়ে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতে হবে। (নতুবা নিশ্চিত জাহান্নাম!) উল্লেখ্য যে, আল্লাহর সার্বভৌমত্বের প্রতিনিধিত্বকারী নেতা ইসলামী সমাজ এর সম্মানিত আমীর হযরত সৈয়দ হুমায়ূন কবীর শির্কে নিমজ্জিত জাতির মানুষকে আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন এবং বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত আল্লাহর সর্বশেষ নাবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহ প্রদত্ত্ব একমাত্র জীবন ব্যবস্থা ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অর্থ ও সময় ব্যয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইসলামী সমাজ এর এই মহতী কাজে শামিল হয়ে সমর্থন ও সহযোগিতা করে প্রত্যেকের এ মৌলিক দায়িত্ব পালন করা উচিত।
নিজে বাঁচতে, জাতিকে বাঁচাতে এবং মানবতার কল্যাণে- সকল দলের নেতা কর্মী, আলেম, ওলামা, পীর, মাশায়েখ, এবং জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সকল শ্রেনী পেশার মানুষকে ইসলামী সমাজ এর এই মহতী প্রচেষ্টায় শামিল হওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাচ্ছি।
লেখাটি পড়ে গভীরভাবে ভাবুন! নিজে বাঁচুন!! এবং জাতিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।